X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুর-ছন্দে পঞ্চাশের গল্পগাথা উপভোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ২২:৩১আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:২৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দর্শক সারিতে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও মহান বিজয়ের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসে শুরু হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয় যৌথভাবে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় পৌঁছালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি তাকে অভ্যর্থনা জানান।

মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ছবি: পিআইডি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুঁথিপাঠের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন এবং কর্মকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের জন্যও তুলে ধরা হয়। নাচ, গান, কবিতা, মঞ্চনাটক ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কবিতা ও গানে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি এবং জনজীবন মূর্ত হয়ে ওঠে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের বিভিন্ন  উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উঠে আসে বিভিন্ন পরিবেশনায়।

জাতীয় সংসদের দেয়ালে আলোর প্রক্ষেপণে তুলে ধরা হয় জাতির পিতার সংগ্রামের অবয়ব আর শোনানো হয় তার বজ্রকণ্ঠ।

মাসুম রেজার লেখা পুঁথিপাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান এগিয়ে নেন অভিনেতা মাসুম আজীজ। পুঁথির শুরুতে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও উন্নয়ন পরিক্রমার ধারণা দেওয়া হয়। এরপর দলগত আবৃত্তিতে উঠে আসে সেই যাত্রার নানান দিক। সোহেল আনোয়ারের গ্রন্থনা ও হাসান আরিফের নির্দেশনায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামের এই পরিবেশনার সংগীতায়োজন করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র।

চল্লিশ জনের বেশি শিল্পীর এই দলের পরিবেশনায় নেতৃত্ব দেন খ্যাতিমান অভিনেতা-আবৃত্তিকার আসাদুজ্জামান নূর। 

আবৃত্তির পর পরিবেশন করা হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর থিম সংগীত ‘একটাই আছে দেশ’। গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের লেখা এই গানের সুর করেছেন সাজিদ সরকার। থিম সংগীতের সঙ্গে ছিল নাচের দল নৃত্যাঞ্চলের শতাধিক শিল্পীর নাচ। নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আর নীপা ছিলেন তাদের অগ্রভাগে।

সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবেশনার জন্য সাধনা শিল্পী গোষ্ঠীকে মঞ্চে আহ্বান করেন মাসুম আজীজ। শিল্পীরা মরমী সংগীত, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, ধামাইল, গম্ভীরা উপস্থাপন করেন। সঙ্গে ছিল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবেশনাও।

পুঁথিপাঠে তুলে ধরা হয় বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির আলোকে বাংলাদেশের পথচলার গল্প। তুলে আনা হয় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃতির কথা।

এরপর সংগীত পরিবেশনা করেন বিদেশি শিল্পীরা। জোয়ান বায়েজের ঐতিহাসিক ‘বাংলাদেশ’ গানও পরিবেশন করেন তারা। ছিলেন স্কটল্যান্ডের সারা জয়েস, সেনেগালের কাদিয়ালি কোইয়াটে আর তুরস্কের ক্যানারকানে মতো গুণী শিল্পীরাও।

পুঁথিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া এবং বিশ্বশান্তির জন্য বাংলাদেশের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন মাসুম আজীজ।

শিশুশিল্পীদের পর্বে থাকে গান আর নৃত্য। আট বিভাগ থেকে বাছাই করা ৮৫ শিশু শিল্পীর সঙ্গে ছিলেন রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সৈয়দ আব্দুল হাদী। ইববার টিপুর সংগীতায়োজনে এই পর্বে পরিবেশন করা হয় ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’, ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’, ‘জয় হোক, জয় হোক, শান্তির জয় হোক, সাম্যের জয় হোক, সত্যের জয় হোক’ প্রভৃতি গান

সৈয়দ আব্দুল হাদী গেয়ে শোনান, ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে/আমরা তার তরে একটি সাজানো বাগান চাই।’

সবশেষে অনুষ্ঠানের উপস্থাপক স্মরণ করেন গত পঞ্চাশ বছর ধরে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার পথে এখনও বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণের কথা।

তিনি বলেন, ‘যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন মহাবিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আজ অকুণ্ঠ আঁখি মেলে জেগে উঠছে তার সোনার বাংলা। আর এই সোনার বাংলাতেই জেগে ওঠেন বঙ্গবন্ধু, জেগে ওঠেন কালের ঊর্ধ্বে, সকল কালে, সর্বত্র বিস্তৃত হয়ে মহাবিজয়ের মহানায়ক হয়ে।’

প্রধানমন্ত্রী তার মোবাইল ফোনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কিছু মুহূর্ত ধারণ করেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রথম দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন। তিনি বাংলাদেশের পর্যটনের ব্র্যান্ড নেম ‘মুজিবস বাংলাদেশ’ লেখা একটি লোগো উন্মোচন করেন।

/এপিএইচ/এমওএফ/ইএইচএস/এফএ/
সম্পর্কিত
বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস, এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী
সুন্দরবনে যাতে আর আগুন না লাগে সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সর্বশেষ খবর
শরীয়তপুরে আগুনে পুড়লো ৯ দোকান, ক্ষতি দুই কোটি টাকা
শরীয়তপুরে আগুনে পুড়লো ৯ দোকান, ক্ষতি দুই কোটি টাকা
ঢাকা উইমেনস ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ মে
ঢাকা উইমেনস ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ মে
রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিলো ইসরায়েলি বাহিনী
রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিলো ইসরায়েলি বাহিনী
কাওরানবাজারে প্রাইভেটকারে আগুন
কাওরানবাজারে প্রাইভেটকারে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র